কিভাবে শুরু করবেন জেকে লাইফ স্টাইল?? একদমই বুঝতে পারছেন না??
পোস্টটি আপনার জন্য🥰
আমরা ওজন কমানো বা যেকোনো রোগ মুক্তি যার জন্যই জেকে লাইফ স্টাইল ফলো করিনা কেনো সবচেয়ে আগে আমাদের ৭-১০ দিন বা খুদা কমার আগ পর্যন্ত দুই বা তিনবেলা জেকে লাইফ স্টাইল এর নির্দেশিত খাবার গুলো খেয়ে এডাপটেশন করতে হবে। তারপর এভাবে চলার পর খুদা কমে গেলে আপনি ফাস্টিং শুরু করবেন।আপনার কাংখিত লক্ষ্যে না পৌছানো পর্যন্ত ফাস্টিং করতে হবে। আপনি ভালো ফলাফল পেতে কাংখিত লক্ষ্যে না পৌছানো পর্যন্ত সপ্তাহে ৪-৫ দিন ড্রাই ফাস্টিং বা রোজা এবং ২-৩ দিন ওয়াটার ফাস্টিং এভাবে চালিয়ে যাবেন। তারপর যখন আপনার ওজন কমে যাবে বা আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন তখন থেকে আপনি সঠিকভাবে মেইনটেইন শুরু করবেন।এবং সারা জীবন মেইনটেইন করবেন।💝💝
তাহলে জেনে নিন কি কি খাওয়া যাবে নাঃ
❎ সকল ধরনের শস্য জাতীয় খাবার। যেমন : চাল,গম,ভুট্রা,যব ইত্যাদি।
❎ এবং এগুলো থেকে তৈরি যে কোন খাবার। যেমন: ভাত,চিড়া, মুড়ি,রুটি, খই,পরটা,বিস্কুট, চানাচুর, নুডুলস, পাসটা,ওরস, কর্নফ্লেক্স,পাউরুটি, কেক,সকল রকমের পিঠা ও পায়েশ ইত্যাদি।
❎ চিনি, গুড়, মধু এবং এগুলো থেকে তৈরি সকল রকমের কোমল পানীয় এবং খাবার। যেমন: কোল্ড ড্রিক্নস,এনার্জি ড্রিক্নস,জুস,বেভারেজ,( আইসক্রিম, চকলেট,চুইংগাম।
❎ ফল।মেইনটেইন এ যাওয়ার আগ পর্যন্ত লেবু,ডাব,এভোকাডো, আমলকি ছাড়া সব ধরনের ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। মেইনটেইন এ যাওয়ার পর খেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
❎ সরাসরি দুধ এবং দুধ থেকে তৈরি খাবার। যেমন: টকদই, দই, পুডিং,রস মালাই,এবং যে কোন মিস্টি জাতীয় খাবার।মেইনটেইন এ যাওয়ার পর ঘরে বানানো টক দই খাওয়া যাবে।
❎ সবজি। যেমন: আলু, পাকা মিস্টি কুমরা, কাচা কলা,বেবি কর্ন,কচু,কচুর মুখী।
❎ সব ধরনের ডাল। যেমন: মসুর, মুগ,ছোলা,মটর শুটি, মাশকলাই,সিমের বিচি ডায়েট চলা অবস্থায় নিষেধ।মেইনটেইন এ যাওয়ার পর ডাল খাওয়া যাবে।
❎ তেল। যেমন: সয়াবিন, সুর্যমুখী,রাইস ব্রেইন,ভুট্রা ইত্যাদি থেকে তৈরি তেল যা ভেজিটেবল অয়েল বলে চালানো হয়ে থাকে।
❎ সব ধরনের ফাস্ট ফুড।
❎ সব ধরনের প্রসেসড ফুড।
❎ বাহিরে রেস্টুরেন্টে থেকে তৈরি যে কোন খাবার।
✅এখন আসেন কিভাবে এডাপটেশন করবেন??
আপনারা আপনাদের সুবিধামতো নিজেরা নিজেদের পছন্দসই মেনু সিলেক্ট করবেন।তারপরও একটা নমুনা মেনু দেয়ার চেষ্টা করছি।
যেমন **সকালের খাবার দেরি করে খান।১০ টার দিকে।দুইটা ডিম ঘি বা এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল দিয়ে পোচ,বাদাম,সালাদ।
**দুপুরে বেশি করে শাক সবজি, মাছ বা মাংস যেকোন একটা দুই পিছ,একটা ডিম পোচ, সালাদ।
**বিকালে বাদাম,বুলেট কফি খেতে পারেন।
**রাতে বেশি করে শাক সবজি, মাছ বা মাংস,ডিম একটা পোচ,সালাদ।
👉এডাপটেশনের সময় আপনি ডেইলি ৪-৬ টা ডিম খেতে পারবেন তাই আপনার সুবিধা মতো তিনবেলায় খাবেন।
👉ভুসি,তোকমা,চিয়া সিড,কচি ডাবের পানি,হলুদ চা,বুলেট কফি এগুলো এডাপটেশন এর সময় এনি টাইম খেতে পারবেন। পরে ফাস্টিং এর সময় এগুলো নন ফাস্টিং আওয়ারে খাবার খাওয়ার টাইমের মধ্যে খাবেন। কারন এগুলো খেলে ফাস্টিং ব্রেক হয়।
👉এডাপটেশনের সময় বা পরবর্তীতেও অবশ্যই এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল খেতে চেষ্টা করবেন। এটা খুদা কমাতে,দূর্বলতা কমাতে সহায়তা করে। আপনি বুলেট কফিতে, হলুদ চায়ে,সলাদে মিশিয়ে,ডিম বাদাম ভাজায় এক্সট্রা ভার্জিন কোল্ড প্রেস কোকোনাট অয়েল ব্যাবহার করতে পারেন। এমনকি চামচে করে কয়েক চামচ শুধু শুধুও খেতে পারেন। (এমনটাই আমার অনেক মজা লাগে 😁)
👉আপনি পানি দিনে ২-৩ লিটার শরীরের চাহিদা বুঝে খাবেন।এর মাঝে এক লিটার পানিতে এক চা চামচ পিংক সল্ট মিশিয়ে ঔ পানিটা খাবেন।
👉একটা কথা প্লিজ মনে রাখবেন।আগে আপনি প্লেট ভরে ভাত খেতেন, পেট ভরতো।এখন আপনাকে বেশি করে শাক সবজি, সালাদ খেয়ে পেট ভরাতে হবে।শাক সবজি খেতে পারেন না এমনটা বলবেন না প্লিজ। মজার মজার নতুন নতুন রেসিপি করে করে খান।দেখবেন এক সময় প্রেমে পড়ে যাবেন।আমিও কোন এক সময় আলু ছাড়া কিছুই খেতাম না।আর এখন শাক সবজি দেখলেই বিলিভ মি জিভে জল চলে আসে🤤🤤।
👉ডিম অবশ্যই কুশুম নরম রেখে খাটি ঘি বা এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল দিয়ে পোচ করে খাবেন।বাদাম চেষ্টা করবেন কাঠ বাদাম খেতে। চিনা বাদাম খেলে ডিম পোচ করার পর ওটা হালকা আচে অল্প ভেজে নিবেন। বাটার দিয়ে ডিম পোচ করতে চাইলে অবশ্যই ঘরে বানানো বাটার হতে হবে। কেনা বাটার খাওয়া যাবে না।
👉মন ঠিক করে জেকে লাইফ স্টাইল শুরু করবেন।দৃঢ় মনোভাব নিয়ে শুরু করবেন।জেকে লাইফ স্টাইল এর নির্দেশিত খাবারের বাইরে কিছুই খাওয়া যাবে না।খেলে আপনার কস্টটা বৃথা যাবে।
👉মনে রাখবেন আমরা না খেয়ে থাকিনা।খুদা পেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াই না।এডাপটেশন এর সময় আপনার যখনি খুদা লাগবে খাবেন কোন সমস্যা নাই তবে অবশ্যই জেকে লাইফ স্টাইল এর নির্দেশিত খাবার।আর এডাপটেশন এর পর আপনার খুদা কমে যাবে তখনি আপনি একবেলা খেয়ে ফাস্টিং শুরু করবেন।
কিভাবে ওয়াটার ফাস্টিং করবেন????
ওয়াটার ফাস্টিং হলো সারাদিনে একবার জেকে লাইফ স্টাইল এর খাবার খেয়ে বাকিটা সময় পানি অথবা পানি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকা।একবেলার খাবারটা আপনি রাত ৭-৮ টার মধ্যে খাবেন। এক বেলার মেইন মিলে আপনি দুইটা ডিম পোচ, বাদাম,বেশি করে শাক সবজি, মাছ বা মাংস যেকোন একটা,সালাদ রাখতে পারেন।
JK Lifestyle এ ওয়াটার ফাস্টিং করার নিয়ম👉
ওয়াটার ফাস্টিং চলা কালিন সারাদিনে
যা যা খেতে পারবেনঃ
১. পানি
২.পিংক সল্ট মিশিয়ে পানি
২. ডিটক্স ওয়াটার
৩. লেবু পানি
৪. গ্রীণ টি,
৫-ব্লাক কফি
৬-চিনি ছাড়া আদা বা লেবু বা মশলা দিয়ে বানানো রং চা।
৫. Apple Cider Vinegar ( With The Mother) তবে আপনি রাতে মেইন মিল খাওয়ার আগে ভিনেগার খেতে পারেন।
ওয়াটার ফাস্টিং করার সময় এর বাইরে কোন কিছু খাওয়া যাবে না।
*ডাবের পানিও ওয়াটার ফাস্টিং চলাকালে খাওয়া যাবে না।খাবার খাওয়ার টাইমের মধ্যে নন ফাস্টিং আওয়ারে খাবেন।
*ইসুপগুল এর ভুসি,তোকমা,চিয়া সিডও ওয়াটার ফাস্টিং চলাকালে না,খাবার খাওয়ার টাইমের মধ্যে খাবেন।
[ বিঃদ্রঃ ওয়াটার ফাস্টিং চলাকালীন বুলেট কফি বা হলুদ চা খাওয়া যাবে না, তাতে ফাস্টিং ভেঙে যায়। আপনারা চাইলে, হলুদ চা রাতে মেইন মিল খাওয়ার আগে খেতে পারেন। বুলেট কফি ঘুমের সমস্যা না থাকলে রাতে খেতে পারেন। তবে বুলেট কফি খেতেই হবে এমন না।)
এইতো গেলো ওয়াটার ফাস্টিং। এবার আসি ড্রাই ফাস্টিং বা রোজা কিভাবে করবেন???
ড্রাই ফাস্টিং মানে হলো রোজা রাখা । আপনার ফ্যাট অ্যাডাপটেশন করার পর যখন ক্ষুদা লাগবেনা তখন আপনি রোজা রাখা শুরু করবেন।সপ্তাহে ৪-৫ দিন রোজা রাখতে পারেন।
কিভাবে ড্রাই ফাস্টিং বা রোজা রাখবেন:
আমরা যারা মুসলমান, আমরা যেভাবে রোজা রাখি সেভাবেই রোজা রাখব। অন্যান্য ধর্মের ভাই-বোনেরা আপনারা আপনাদের ধর্ম অনুসারে রোজা অথবা উপবাস অথবা ফাস্টিং করবেন।
সাহরীতে
* পিংক সল্ট মিশানো পানি খাবেন শুধু।
* যারা শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখতে পারবেননা তারা দুটো ডিম ঘি দিয়ে ভেজে খাবেন। আস্তে আস্তে পানি খেয়ে রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
️ ইফতারে
* আপেল সিডার ভিনেগার + আদা রস + লেবু রস কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন।
* অল্প পরিমাণ বাদাম ঘি দিয়ে ভেজে খাবেন । বেশি বেনিফিট চাইলে কাঁচা বাদামের সাথে ঘি অথবা মাখন মাখিয়ে খাবেন।
* ডিম ২ টা ঘি দিয়ে পোচ করে খাবেন।
* মাছ/ মাংস চর্বি সহ / কলিজা পরিমিত মাত্রায় যেকোন একটা খাবেন।
* প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি চিবিয়ে চিবিয়ে খাবেন।
*সালাদ খাবেন।
* পরিমিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। পিংক সল্ট মিশিয়ে পানি খাবেন।
* অবশ্যই প্রতিদিন একটা কচি ডাবের পানি খাবেন।
এভাবে আপনারা চালিয়ে যাবেন যতদিন না কাংখিত লক্ষ্যে না পৌছান।তারপর থেকে সারাজীবন মেইনটেইন করে সুস্থ থাকবেন ইনশাআল্লাহ।
কমেন্ট এ গাইডলাইন দিয়ে দিচ্ছি।ওটা ডাউনলোড করে নিবেন।কি খাওয়া যাবে, যাবেনা ওখানে বিস্তারিত লিখা আছে।এরপরও কারো কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট এ জানাতে পারেন। আমার ছোট্ট অভিজ্ঞতা থেকে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,জেকে লাইফ স্টাইল এর সাথেই থাকবেন 💝🥰🥰
লেখা -নুসরাত জাহান।(স্যার এর ভিডিও থেকে)
https://youtu.be/mFyCPeV2IVM
https://youtu.be/GWNgVV9OSfQ
https://youtu.be/xaR1vK8TGlI
https://youtu.be/_VGp8J6FSXw